কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলা সহ সারা বাংলাদেশে একযোগে হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইনের প্রশিক্ষণ সহ সকল কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা
★বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদার দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলায় হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইনের সকল কার্যক্রমসহ প্রশিক্ষণ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক,সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সকল স্বাস্থ্য সহকারীগণ।
এতে করে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারী সারা দেশের ন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জেও হাম-রুবেলা ক্যাম্পইনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যার ফলে হামের টিকা থেকে বঞ্চিত হবে এ জেলার কয়েক লাখ শিশু।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারী থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগ হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। তবে স্বাস্থ্য সহকারীদের পক্ষ থেকে ক্যাম্পেইনটি বর্জনের ঘোষণায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই মহাগুরুত্বপূর্ণ ক্যাম্পেইন (এখানে ৯ মাস থেকে ১০ বছরের সকল শিশুকে টিকা দেওয়া হবে) ।
এদিকে স্বাস্থ্য সহকারীরা আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচীর ৪ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ইপিআইসহ ক্যাম্পেইনের সকল কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ১ জানুয়ারী থেকে ৪ দফা দাবীতে বেতন গ্রেড ১৬তম থেকে ১৪ তম গ্রেডে উন্নতিকরণ, স্বাস্থ্য সহকারিদের বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের ডিপ্লোমা কোর্স দ্রুত চালু করা, প্রতি ৬ হাজার লোকের বিপরীতে ২ জন করে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ করা এবং স্বাস্থ্য সহকারীদের এমএসআই মাধ্যমে নীড় পাতায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবী করেন।
এদিকে স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, ১৯৭৯ সালে ৭ এপ্রিল সম্প্রসারিত টিকা দান কর্মসূচী (ইপিআই) চালু হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য সহকারীরা এ কর্মসূচীর আওতায় দেশের ১ লাখ ২০ হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কেন্দ্রে সফল ভাবে টিকা প্রদান করে বর্তমানে ১০টি মারাত্বক সংক্রামিত রোগের বিরুদ্ধে টিকা প্রদান করছেন। এবং স্বাস্থ্য সহকারীদের পরিশ্রমের অর্জনেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ইমিউনাইজেশন কর্মসূচীর সফলতার জন্য গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাক্সিনেশন এন্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভী) কর্তৃক পেয়েছে পুরস্কার, ২০১০ সালে ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশ কমানোর জন্য জাতিসংঘের এমডিজি-৪ অ্যাওয়ার্ড, ২০১১ সালে শিশুমৃত্যু-মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর জন্য সাউথ সাউথ পুরষ্কার, ২০১২ সালের বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচীর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় (গ্যাভি) কর্তৃক টিকাদানকারী দেশের অ্যাওয়ার্ড,২০১৪ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ টিকাদানকারী দেশের অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশকে দিয়েছে পোলিও নির্মুলের সনদ, ২০১৬ সালে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) কর্তৃক বাংলাদেশকে পোলিও নির্মূলে সাফল্যের স্বীকৃতি সনদ প্রদান, ২০১৬ সালে ধনুষ্টকার নির্মুলের সনদ অর্জন এবং সর্ব শেষ ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাক্সিনেশন এন্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি) কর্তৃক শিশুদের টিকাদান কর্মসূচীর ব্যাপক সাফল্যের জন্য #ভ্যাকসিন_হিরো সম্মাননা ভূষিত হয়েছেন।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় স্বাস্থ্য সহকারীদের পরিশ্রমের বিনিময়ে সরকার প্রধানসহ স্বাস্থ্য বিভাগ আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরিচিত ও প্রশংসনীয় হলেও মানব শিশু স্বাস্থ্য ও মাতৃ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা তৃণমূলের স্বাস্থ্য সহকারীদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি।
★মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকা কালিন স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যদার দাবি বাস্তবায়নে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু এটা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
তাই স্বাস্থ্য পরিদর্শক,সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সকল স্বাস্থ্য সহকারীগণ সমন্বয়ে সে ঘোষিত দাবি বাস্তবায়ন চেয়েছেন।
তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানান।